ভুক্তভোগী মেয়েকে বিয়ে করায় ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে এক বছরের জামিন দিল হাইকোর্ট। আট বছর কারাভোগের পর বিয়েতে রাজি হয়েছেন আসামি। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আসামিপক্ষে ছিলেন এস এম শাহেদ চৌধুরী।
গত ৫ ডিসেম্বর রাজশাহীর কারাফটকে আসামি দিলীপ খালকোর সঙ্গে বিয়ে হয় তারই খালাতো বোনের। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালার উপস্থিতিতে হয় আনুষ্ঠানিকতা।
- আরও পড়ুন: ধর্ষণের সমাধান বিয়ে?
এই প্রতিবেদন বৃস্পতিবার আদালতে দাখিল করলে আদালত জামিন দেয়।
দিলীপ যাকে বিয়ে করেছেন তিনি তার খালাতো বোন। তার সঙ্গে ছিল প্রেমের সম্পর্ক। তখন মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক। সে সময় তৈরি হয় দৈহিক সম্পর্ক।
২০১১ সালে মেয়েটি হয়ে পড়ে সন্তান সম্ভবা। তখন সে দিলীপকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও পিছিয়ে যান তিনি। গ্রাম্য সালিশ হলেও দিলীপ সিদ্ধান্তে অনঢ়। মেয়েটি সন্তান প্রসব করলেও দিলীপ বিয়ে করেননি।
- আরও পড়ুন: বিয়ে করলে জামিন
ওই বছরের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় খালকোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটি। ২০১২ সালের ১২ জুন রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
- আরও পড়ুন: দুই হাত এক হলো কারাগারে
ওই আদেশে বলা হয়, সন্তান তার মায়ের স্বজনদের তত্ত্বাবধানে থাকবে। বাবার নাম হবে দিলীপ খালকো।
রায়ে বলা হয়, যখন শারীরিক সম্পর্ক হয়, তখন মেয়েটির বয়স ছিল ১৪ বছর। আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্কের সঙ্গে যে কোনো যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলার পর আদালতে বিয়ে
আট বছর সাজা ভোগের পর জামিনের আবেদনের শুনানি হয় হাইকোর্টে। ততদিনে নরম হন দিলীপ। বলেন, তিনি বিয়ে করতে রাজি।
বিষয়টি আমলে নিয়ে হাইকোর্ট উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে কারা তত্ত্ববধায়ককে বিয়ের আয়োজন করতে বলেন। দুই পরিবারের সম্মতিতেই আদালত তাদের বিয়ের আদেশ দেয়।
- আরও পড়ুন: আদালতে বিয়ে: স্ত্রী বাড়িতে, বর কারাগারে
সম্প্রতি বাদীকে বিয়ে করে ধর্ষণ মামলার বেশ কয়েকজন আসামি জামিন পেয়েছেন। ফেনী কারাগারে বিয়ে হয়েছে একটি দম্পতির। নাটোর, কুমিল্লায় বিয়ে হয়েছে আদালতেই। তবে এভাবে বিয়ে হওয়া উচিত কি না, এ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে।